728/90

হার্ট।।heart।। heart block।। myocardial infarction।। heart stroke।। heart fail।। হৃদরোগের চিকিৎসা>https://haqueinfo.blogspot.com

 

হার্ট,হার্টের রোগ, হৃদরোগ,হার্ট ব্লক,heart,heart block,myocardial infarction, heart strok, heart fail, cardiac arest,  causes of heart fail,হৃদরোগের চিকিৎসা
heart block


হার্ট বা heart কিঃ 

হার্ট বা heart একটি জীবন্ত পাম্প যন্ত্র মানৃষের হৃদপিন্ড বক্ষগহ্বরের মধ্যচ্ছদার উপরে ও দুই  ফুসফুসের মাঝ বরাবর বাম দিকে একটু বেশী বাঁকা হয়ে অবস্থিত । এটি বুকের বাঁমপাশে প্রায় ৬০ % অবস্থান দখল করে থাকে । লালচে - খয়েরি রঙের হৃদপিন্ডটি ত্রিকোণা মোচার মত । একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির হৃদপিন্ডের দৈর্ঘ্য ১২ সে .মি প্রস্থ ৯ সে .মি । একটি হৃদপিন্ডের ওজন প্রায় ৩০০ গ্রাম । স্ত্রীলোকে তা পুরুষের চেয়ে এক - তৃতীয়াংশ কম । এটি একটি দ্বিস্তরী পেরিকার্ডিয়াম নামক পাতলা ঝিল্লিতে আবৃত থাকে ।  মানুষের হৃদপিন্ড চার প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ঠ । উপরের দুটিকে ডান বা বাম অলিন্দ, নিচের দুটিকে ডান বা বাম নিলয় বলে । হৃদপিন্ডের প্রাচীর অনৈচ্চিক পেশী দিয়ে গঠিত । মানে নিজের ইচ্ছায় পরিচালনা করা যায় না। এসব পেশি হৃদপেশি বা কার্ডিয়াক পেশি নামে পরিচিত ।
 হৃদপিন্ডের স্বয়ংক্রিয় প্রসারণকে ডায়াস্টোল এবং স্বয়ংক্রিয় সংকোচনকে সিস্টোল বলে । রক্ত সংবহনতন্ত্রের এই অতি গুরুত্বপূর্ণ   অঙ্গটি পাম্পের মতো সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে হৃদপিন্ডের নিজের সহ সারাদেহের বিভিন্ন অংশ থেকে শিরার মাধ্যমে বাহিত করে হৃদপিন্ডে আনীত দুষিত রক্ত ফুসফুসে এবং বিশুদ্ধ রক্ত ধমনীর  সাহায্যে তা আবার  শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রেরণ করে থাকে । একজন সুস্থ প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রতি মিনিটে হৃদপিন্ড গড়ে ৭২বার স্পন্দিত হয় এবং ৫.৪ লিটার রক্ত পাম্পিং করে । 

 

হার্ট বা heart এর রোগঃ  

হার্ট বা heart রোগ দেহের সবচেয়ে মারাত্মক রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম। হৃদরোগ হল এমন একটি অবস্থা যা হৃৎপিণ্ডের পেশীকে প্রভাবিত করে, যা প্রাণঘাতী জটিলতার কারণ হতে পারে । এ রোগ কয়েক প্রকারে দেখা দিতে পারে । তবে সচারচর বা সবচেয়ে সাধারণ হৃদরোগগুলি হ'ল:
১) করোনারি আর্টারি ডিজিজ
২) কার্ডিয়োমায়োপ্যাথি,
৩) হার্ট ভালভের রোগ,
৪) এরিথমিয়া, 
৫) জন্মগত হৃদরোগ ইত্যাদি । 

 

করোনারি আর্টারি ডিজিজঃ

বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বে হার্টের যে রোগটি মহামারি রুপ ধারন করেছে তা হলো - করোনারি আর্টারি ডিজিজ এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর প্রধান কারণ, প্রতি বছর 5 মিলিয়নেরও বেশি আমেরিকান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। 50 বছরের কম বয়সী পুরুষদের জন্য হৃদরোগই এক নম্বর ঘাতক। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। 

 করোনারি আর্টারি ডিজিজ মূলত দুই প্রকার - এঞ্জাইনা প্যাক্টরিস ও মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকসন  

হার্ট,হার্টের রোগ, হৃদরোগ,হার্ট ব্লক,heart,heart block,myocardial infarction, heart strok,heart attack,heart fail, cardiac arest,  causes of heart fail,হৃদরোগের চিকিৎসা

এঞ্জাইনা  পেক্টোরিস

 

এঞ্জাইনা  পেক্টো রিসঃ  

হৃৎপিণ্ড একটি পাম্প মেসিন হিসেবে কাজ করে এবং তা  সঠিকভাবে কাজ কোরে মানবদেহের সকল অঙ্গে রক্ত ​​সরবরাহ করে। এই সক্ষমতা  অর্জনের জন্য, হৃৎপিণ্ডের নিজস্ব পেশী-কলায়  সঞ্চালনের জন্য নিরবিচ্চিন্ন  রক্ত ​​প্রবাহের প্রয়োজন হয় ।নিজস্ব পেশী-কলায় রক্তের এই অবিচলিত সরবরাহ বাম এবং ডান করোনারি ধমনী দ্বারা রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। 
মানবদেহে মারাত্মক একটি সমস্যা হৃদপিণ্ডের ধমনী ব্লক অথবা হার্ট ব্লক। রোগটি মূলত অতিরিক্ত কোলেস্টোরল এবং ফ্যাটি প্লাকের কারণে হয়ে থাকে। যেখানে ধমনীর  দেয়ালে ফলকের আকারে চর্বি জমা হয়, যার ফলে রক্ত ​​প্রবাহকে সংকুচিত করে এবং বাধা সৃষ্টি করে। দেয়ালে গঠিত প্লাকগুলি করোনারি ধমনীকে ছিঁড়েও ফেলতে পারে এবং রক্ত জমাট বাঁধাতেও পারে যা রক্ত প্রবাহ বন্ধের কারণ হতে পারে।    
করোনারি আর্টারি নামে হৃৎপিণ্ডের গায়ে থাকে দুটি ছোট ধমনী। এরাই হৃৎপিণ্ডে পুষ্টির যোগান দেয়। যদি এই ধমনীগুলি পাম্প করার জন্য হৃৎপিণ্ডে সঠিক পরিমাণে রক্ত ​​​​সরবরাহ করতে অক্ষম হয়, তবে হৃৎপেশী-কলায় রক্ত ​​সঞ্চালনের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পুষ্টি- অক্সিজেন সরবরাহ ও কোষ- কলায় উৎপন্ন দুষিত বজ্য নিষ্কাশন ব্যাহত হওয়ায়  কোষ- কলা দুর্বল , অসুস্থ ও একপর্যায়ে মারা যেতে থাকে এবং হৃৎপিণ্ডে ডিসফাংশন দেখা যায়। ফলে নানাবিধ উপসর্গ দেখা দেয় যেমন-    
১ স্টার্নামের (sternum) পিছনে, একটু বাম পাশে বুকে চাপ ও ব্যথা হয়। 
২. ব্যায়াম বা অন্য শারীরিক কাজে,মানসিক চাপ, অতি ভোজন, শৈত্য বা আতংকে এমন কি বসা থেকে দাঁড়ালে এবং হাত উচু করলেও বুকে ব্যথা বাড়তে  পারে এবং তা  প্রায়   ৫–৩০ মিনিট স্থায়ী হয়। 
৩. অ্যানজাইনা গলা, চোয়াল, কাধ, পিঠ,  বাহু,  এমনকি দাঁতেও ছড়াতে পারে।
৪. অনেক সময় ব্যথা কোথা থেকে আসছে তা বোঝা যায় না। 
৫. বুকে জ্বালাপোড়া, চাপ, নিষ্পেষণ বা আড়ষ্ট ভাব সৃষ্টি হয়ে চরম অস্বস্তির প্রকাশ ঘটায়।
৬. বুকে ব্যথা ছাড়াও হজমে গন্ডগোলা ও বমিভাব হতে পারে। 
৭. ঘন ঘন শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়া কিংবা Asthma-হাঁপানি ও শ্বাসরুদ্ধকর ব্যথা দেখা দিতে পারে। 


হার্ট,হার্টের রোগ, হৃদরোগ,হার্ট ব্লক,heart,heart block,myocardial infarction, heart strok,heart attack,heart fail, cardiac arest,  causes of heart fail,হৃদরোগের চিকিৎসা

মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকসন


মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকসনঃ  

 এঞ্জাইনার ঐ অবস্থা চলতে চলতে হৃৎপেশীর কোষ- কলা দুর্বল , অসুস্থ ও একপর্যায়ে একটা বৃহৎ অংশ মারা গেলে  হৃৎপিণ্ড হঠাৎ অচল  হয়ে পড়ে । ফলে রুগী প্রচণ্ড বুক ব্যথা নিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই  মারা  যায় । এই অবস্থাকে হার্ট ষ্টোক, হার্ট অ্যাটাক বা মেডিকেলের ভাষায় মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (এমআই) বলা হয়।  
মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন এর লক্ষন মারাত্মক ধরনের হয়ে থাকে যেমন-
ক) হঠাৎ মাথা ঘোরা বা মাথা ঝিমঝিম করা,
খ) বুকের মাঝখানে  অসহ্য চাপ, মোছড়ানো অস্বস্তি বা ব্যথা বুকের মধ্যে কিছু চেপে বসে আছে অথবা কিছু আটকে আসছে এমন অনুভূত হতে পারে,  সাথে গলা, চোয়াল,  পিঠ, বাহু ও পাকস্থলির উপরের অংশ পর্যন্ত ব্যথার বিস্তৃতি  
 
গ) বমি বমি ভাব, বমি হওয়া।
 
ঘ) ঘন ঘন নিঃশ্বাস প্রশ্বাস, শ্বাসকষ্ট ,দম বন্ধ হওয়া ভাব
 
ঙ) ঠান্ডা ঘাম বেরিয়ে যাওয়া
 
চ) শারীরিক দুর্বলতা বা শক্তি হারিয়ে ফেলা , প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন হয়ে পড়া , রোগী অস্বাভাবিক অস্থিরতা অনুভব করবেন (প্যানিক অ্যাটাক) মৃত্যুর আশংখা অথবা তিনি মারা যাচ্ছেন এমন মনে হবে।
 
ছ)  হার্ট অ্যাটাক হলেই সবার বুকে তীব্র ব্যথা হবে—এমনটি নয়। কারও কারও ক্ষেত্রে ব্যথাটি বদহজম অথবা গ্যাস্ট্রিকের ব্যথার মতো  মনে হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে রোগীর আসলেই হার্ট অ্যাটাক না গ্যাস্ট্রিকের ব্যথার কারনে হচ্ছে তা  আনুষঙ্গিক লক্ষণগুলো পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবে।


করোনারি আর্টারি ডিজিজের কারনঃ 

করোনারি আর্টারি ডিজিজের বিবিধ কারনের মধ্যে নিচের কারন গুলো অন্যতম যেমন- 

করোনারি ধমনীতে প্রতিবন্ধকতা বা ব্লকঃ
করোনারি আর্টারি ডিজিজের বিবিধ কারনের মধ্যে নিচের কারন গুলো অন্যতম যেমন- 

করোনারি ধমনীতে প্রতিবন্ধকতা বা ব্লকঃ

করোনারি ধমনীতে  ব্লক সৃষ্টি হওয়ার প্রধান প্রধান কারন গুলোর মধ্যে মক্ষম হলো - ধূমপান+মদপান, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত তেল- চর্বি যুক্ত খাদ্য গ্রহনের ফলে রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, টেনশন+রাত্রি জাগরণ ইত্যাদি ,   

করোনারি এম্বলিজম (embolism)- অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের সাথে অতিরিক্ত শর্করা, প্রোটিন , তেল- চর্বি যুক্ত খাদ্য গ্রহন অথচ সালাদ, পানি কম খাওয়ার কারনে রক্ত তারল্য কমে যাওয়া।ফলে সরু করোনারি আর্টারিতে রক্তের এম্বলস আটকিয়ে বা জমাট বেধে যাওয়া।   

অ্যারিথমিয়া(arrhythmias)- অনিয়মিত হৃদস্পন্দন যা হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক ছন্দের বাইরে চলে যাওয়া। যখন হৃৎপিণ্ডের স্পন্দনের সমন্বয়কারী বৈদ্যুতিক সংকেতগুলি সঠিকভাবে কাজ করে না। ফলে ত্রুটিপূর্ণ সংকেতে হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন খুব ধীর  (ব্র্যাডিকার্ডিয়া), আবার খুব দ্রুত (টাচিকার্ডিয়া), বা অনিয়মিতভাবে হতে পারে। কিছু অ্যারিথমিয়া ক্ষতিকর এবং এমনকি জীবনর জন্য হুমকি হতে পারে। 

উচ্চ রক্তচাপঃ উচ্চ রক্তচাপের ফলে হৃৎপিণ্ডের করোনারির সুক্ষ আর্টারিতে অসহ্য চাপ পড়ায় সুক্ষ আর্টারির জালিকা ফেটে যেয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে এবং তথায় পচন ধরে হৃৎপিণ্ডের অচলাবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের ফলে কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।     

 

কিডনি রোগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সন্ধান পেতে এখানে ক্লিক করুন


রক্তাল্পতা বা রক্তের নিম্নচাপঃ এ ক্ষেত্রে করোনারির সুক্ষ আর্টারির জালিকা বেষ্টিত প্রান্তিক  এলাকায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি সমৃদ্ধ রক্ত পৌছতে পারে না । ফলে সেই এলাকার কোষ- কলা  দুর্বল , অসুস্থ ও একপর্যায়ে মারা যেতে থাকে এবং হৃৎপিণ্ডে পচন ও ডিসফাংশন দেখা দেয় । 

করোনারি আর্টারির স্পাজমঃ 

এমন অনেক রোগী  আছে যাদের এনজিওগ্রাম করে তাদের হার্ট নরমাল পাওয়া গেছে, হার্ট ব্লক বা কোন রিস্ক ফ্যাক্টর নেই। তারপরও দেখা গেছে, তাদের বুকে ব্যথা আছে বা হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। তাদের আসলে এক ধরনের করোনারি আর্টারির স্পাজম হয়ে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।  

 

করোনারি আর্টারিতে ক্রমাগতভাবে ঐ অবস্থা চলতে থাকলে চূড়ান্ত পরিনত হিসাবে হৃৎপেশীর কোষ- কলা দুর্বল , অসুস্থ ও একপর্যায়ে একটা বৃহৎ অংশ মারা যায় এবং  হৃৎপিণ্ড হঠাৎ অচল  হয়ে পড়ে । ফলে রুগী প্রচণ্ড বুক ব্যথা নিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই  মারা  যায় । এই অবস্থাটায়  হার্ট ষ্টোক, হার্ট অ্যাটাক বা মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (এমআই) এর প্রধান কারন। 

হার্ট অ্যাটাকের ঝুকি বা রিস্ক ফ্যাক্টর সমুহঃ

কিছু কিছু রোগ যেমন - ডায়াবেটিস , হাইপ্রেসার বা লো প্রেসার, বাল্যে রিউমেটিক ফিভার, লিভার ও কিডনির জটিলতা, উচ্চ মাত্রার লিপিড প্রোফাইল ইত্যাদির উপস্থিতি ।

তামাক- জর্দা, গুল,ভাং,গাজা,ধুমপান, মদপান ইত্যাদি যে কোন প্রকারের নেশা দ্রব্য গ্রহন।

তেল বা ফ্যাট - অতিরিক্ত তেল- চর্বি , প্রতিনিয়ত রিচ ফুড, ফাস্ট ফুড, কোল ড্রিঙ্কস খাওয়া।

ফাইবার ঘাটতি - পর্যাপ্ত পরিমানে ফাইবার যুক্ত শাক-সব্জি ,ফল-মুল, সালাদ ইত্যাদি না খাওয়া।

মানসিক অস্থিরতা- টেনশন, হতাশা,রাত্রি জাগরন, খাওয়া-দাওয়াই অনিয়ম , দম ধরে থাকা বেদনাময় জীবন,

ব্যায়ামের ঘাটতি - বসে থাকা জীবন বা সব সময় বসে বসে স্নায়ুবিক চাপের কাজ করা, মোটেও এক্সারসাইজ না করা ।

বংশগত- বাপ-মা ও তাদের বংশে এ রোগের ধারাবাহিকতা থাকলে।

 

হার্ট অ্যাটাকের এক মাস আগেই  যে ৬টি লক্ষণ কমবেশি দেখা দিতে পারে  

হার্ট অ্যাটাক যে কারোরই ঘটতে পারে, এবং বেশিরভাগ লোকেরা বুঝতে পারে না যে এটি ঘটতে যাচ্ছে যতক্ষণ না এটি দেখা দেয় । আপনার বয়স যদি ৩০ বা ততুর্ধ্ব হয় এবং             আপনি যদি একটি সম্ভাব্য মারাত্মক হার্ট অ্যাটাক এড়াতে চান, তবে কিছু লক্ষণ রয়েছে যা এটি হওয়ার আগেই আপনাকে আক্রমণটি চিহ্নিত করতে সাহায্য করতে পারে। এক মাস আগে হার্ট অ্যাটাকের এই ৬টি লক্ষণের সতর্কতা আপনার হার্ট অ্যাটাক ঠেকাতে পারে।  

১) শ্বাসকষ্টঃ

শ্বাসকষ্ট মহিলাদের হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম সাধারণ লক্ষণ। আপনি যদি লক্ষ্য করেন যে আপনার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, বা আপনার শ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছে, তবে এটি পরীক্ষা করা মূল্যবান হতে পারে।

২) চোয়াল, ঘাড়, পিঠে বা বগল থেকে কবজি পর্যন্ত ব্যথা; 

চোয়াল, ঘাড় বা পিঠে বা বগল থেকে কবজি পর্যন্ত ব্যথা হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। আপনি যদি এই সংবেদন অনুভব করেন এবং অন্য কোন উপসর্গ থাকে, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসা সেবা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

৩) বমি বমি ভাব বা বমি:

যদিও বিভিন্ন কারণে বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে। ততাফিও এটি মহিলাদের এবং পুরুষদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে সাধারণ সতর্কতা লক্ষণগুলির মধ্যে একটি। আপনি যদি   ।কখনো কোথাও এটি অনুভব করেন এবং এটি অপ্রতিরোধ্য হয়, অবিলম্বে জরুরি চিকিৎসা সহায়তা নিন।

৪) ঘাম:

নারী ও পুরুষদের হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে একটি হতে পারে ঘাম। আপনার অফিসে কি গরম? নাকি আপনি কাজ করছেন? একা ঘাম সবসময় উদ্বেগের কারণ নয়। কিন্তু যদি এটি অন্য কোন চিহ্নের সাথে থাকে, তাহলে এটি আসন্ন হার্ট অ্যাটাকের ইঙ্গিত দিতে পারে। ঘাম অব্যাহত থাকলে হাসপাতালে যান।

৫) হালকা মাথা ব্যথা বা মাথা ঘোরা:

হালকা মাথা ব্যথা বা মাথা ঘোরা হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে একটি। আপনি যদি এইভাবে অনুভব করেন তবে ১০-১৫ মিনিটের জন্য বসতে এবং বিশ্রাম করার চেষ্টা করুন। লক্ষণগুলি অব্যাহত থাকলে ব্যবস্থা নিন। 

৬) ক্লান্তি;

ক্লান্তি মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে একটি এবং এটি চাপ, অতিরিক্ত কাজ বা ঘুমের অভাবের কারণে হতে পারে। হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ক্লান্তিও সাধারণ এবং এটি একটি চিহ্ন হতে পারে যে আপনার হার্ট পর্যাপ্ত রক্ত ​​পাচ্ছে না। আপনি যদি দুর্বলতা বা মাথা ঘোরা অনুভূতি অনুভব করেন তবে এগুলিও লক্ষণ যে আপনার ক্লান্তি একটি প্রাথমিক সতর্কতা চিহ্ন হতে পারে। যদিও বেশ কয়েকটি ঝুঁকির কারণ রয়েছে যা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না, তবে আমরা নিজেকে সাহায্য করতে পারি এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে পারি। 

করোনারি আর্টারি ডিজিজ প্রতিরোধের উপায়ঃ   

করোনারি আর্টারি ডিজিজ প্রতিরোধে নিচের পদক্ষেপগুলো মেনে চললে এই রোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে যেমন -

১) সুস্থ সামাজিক জীবনধারা বজায় রাখাঃ

 যাবতীয় নেশা দ্রব্য যেমন- জর্দা-তামাক,  ধুমপান , মদপান  ত্যাগ করা,

২) হৃৎপিণ্ড বান্ধব স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়া- 

হৃদবান্ধব খাদ্যাভ্যাস বা ব্যালান্স ডায়েট মেইন্টেইন করা মানে প্রাত্যহিক খাদ্য তালিকায় মাছ মাংস ডিম দুধ ডাল  ইত্যাদি থেকে  যে কোনো এক পদ+ ভাত রুটি চিড়া মুড়ি ইত্যাদি থেকে  যে কোনো এক পদ +প্রচুর ফাইবার যুক্ত রঙ্গিন শাক সবজি ইত্যাদি থেকে  যে কোনো এক বা একাধিক পদ মিলে মোট  তিন পদের  ভাত কম তরকারী বেশী’ ভিত্তিক ৩ বেলার  আহার নিশ্চিত করতে হবে।     

৩) চাপ কে সামলানোঃ ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবন শান্তিময় রাখা সহ সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত সকল চাপ, দুশ্চিন্তা  সহনীয় মাত্রায় রাখতে হবে। সবসময় সদাচারন,  পরোপকারী-কল্যান ধর্মী কাজ, খুশী-খোশাল ও হাস্যরস পূর্ণ লাইফস্টাইল নিশ্চিত করতে হবে।        

৪) শারীরিকভাবে সক্রিয় হতে হবেঃ কায়িক শ্রম বিশেষ করে প্রতিদিন সকালে-বিকালে হাঁটাহাঁটি সহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই মসজিদে যেয়ে ধীরস্থিরভাবে আদায় করলে উত্তম ব্যায়াম হয়ে যাবে যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

 ৫) সৎচিন্তার বিকাশ সাধনঃ সব সময় সৎচিন্তা নিয়ে জীবনের উদ্দেশ্য নিয়ে ভাবা, ধর্মীয় কিতাব চর্চা , সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কিত ফিচার পড়া , ছাদবাগান করা ,সম্ভব হলে পশু-পাখি পালন করা ইত্যাদির মাধ্যমে জীবনকে সুখী করে তোলা।

করোনারি আর্টারি ডিজিজ প্রতিরোধে করনীয় শীর্ষক Dr.Naga Srinivaas এর একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারটি দেখা যেতে পারে। Dr.Naga Srinivaas ভারতের মনিপাল হাসপাতালের একজন বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ।

    

[]   

ডা. এম শমশের আলী (কার্ডিওলজিস্ট), সিনিয়র কনসালটেন্ট (প্রা.), ঢাকা মেডিকেল এর মতে রোগীকে অবশ্যই  মনে রাখতে হবে, এসব পদ্ধতি গ্রহণ করেও রোগী সুস্থ থাকতে পারবে না, যদি না জীবনধারা পরিবর্তন করে উপযুক্ত মেডিসিন গ্রহণ না করে এবং হৃদবান্ধব খাদ্যাভ্যাস অনুশীলন না করে। খাদ্যাভাস বদলানো সবচেয়ে জরুরী। আমরা বেশিরভাগ মানুষ কোনো হিসাব করে খাই না। আমাদের শরীরে যতটুকু ক্যালরি দরকার তার চেয়ে বেশি গ্রহণ করলে শরীরে চর্বি আকারে জমা হতে থাকে। অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাদ্য, উচ্চ ক্যালরির খাবার গ্রহণের ফলে রক্তনালিতেও চর্বি জমে ব্লক হয়। প্রতিদিন তাজা শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে। অতিরিক্ত লবণ খাওয়া যাবে না। প্রতিদিন ১ চামচ বা ৫ গ্রামের বেশি লবণ উচ্চ রক্তপাতের সৃষ্টির জন্য দায়ী। নিয়মিত রক্তচাপ ও রক্তের কোলেস্টেরল পরীক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ মত ওষুধ গ্রহণ করতে হবে ।


ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন। শরীরের উচ্চতা অনুযায়ী ওজন ঠিক আছে কিনা তা পরিমাপ করে নিয়ন্ত্রণ করুন। পেটে চর্বি জমলে কমানোর চেষ্ঠা করুন। কায়িক পরিশ্রম বাড়ান। সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন ব্যায়াম করুন। হাঁটা সবচেয়ে সহজ ব্যায়াম। প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস গ্রহণ করতে হবে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত কার্ডিয়াক ব্যায়াম গ্রহণ করতে হবে । এতে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে, রক্তে উপকারি কোলেস্টেরল বা এইচডিএল এর মাত্রা বাড়ায়। রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে । নিয়মিত ওষুধ সেবন এবং সঠিক পথ্য মেনে চলতে হবে । জটিল রোগীদের ক্ষেত্রে বিশেষ করে হার্ট ব্লকের কারণে যাদের হার্ট ফেইলুর দেখা দিয়েছে অথবা হার্ট ব্লক অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে তাদের রিং, বাইপাস অথবা ইসিপি থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণের প্রয়োজন। বুকে ব্যথা অনুভূত হলে বা হার্টের অসুখের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। কারণ হার্ট অ্যাটাকের পর দ্রুত চিকিৎসা করতে পারলে মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব। নিজে সচেতন হয়ে অন্যকেও হৃদরোগের ব্যাপারে সচেতন করে তুলতে হবে।

কোন মন্তব্য নেই

Jason Morrow থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.