সুস্থ থাকার উপায়।।how to be healthy>www.valodactar.com
সুস্থ থাকার উপায়
৩। পর্যাপ্ত পানীয় জল সেবনঃ পানির অপর নাম জীবন।আমাদের দেহের বেশীর ভাগ অংশই পানি দিয়ে তৈরি। সেই জন্য প্রতিদিন গড়ে ৮-১০ গ্লাস (শীত-গ্রিস্মে কম বেশী হতে পারে) পানি পান করা জরুরী। এ লক্ষে প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস বিশুদ্ধ কুশুম কুশুম গরম পানিতে দুই ফালি লেবুর রস ও এক চামচ মধু মিশিয়ে সেবন করতে হবে। প্রতিবার আহার করার আগে হাফ গ্লাস পানি পান করে আহার করা শুরু করতে হবে। আহারের আধ ঘণ্টা পর থেকে পরবর্তী আহারের আগ পর্যন্ত অল্প অল্প করে দুই গ্লাস পানি পান করে ফেলতে হবে। ঘুমানোর আগে এক গ্লাস বিশুদ্ধ কুশুম কুশুম গরম পানিতে এক চামচ ইসবগুলের ভুসী মিশিয়ে পান করতে হবে।
৪। কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করাঃ সুস্থ থাকার জন্য কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়াম একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দিন-রাতের যেকোনো সময়ে কমপক্ষে ২ ঘণ্টা ঘাম ঝরানো শ্রম বা ব্যায়াম করতে হবে। বিশেষ করে যাদের শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ক্যালরি জমা হতে থাকে তারা হাটলে বা দৌড়ালে শরীর ফিট থাকে ও ডায়বেটিস, হৃদরোগ, বাত-ব্যথা,লিভার,কিডনি , হাড়ক্ষয় সহ নানা ধরণের অসুখ থেকে রেহাই পাবেন। আর যারা হাটা-হাটি বা দৌড়ানো বা অন্য কোনো ব্যায়াম করতে পারেন না বা করার সময় হয় না তারা বাড়িতে সবজি বাগান ,পশু-পাখি পালন সহ বাড়ির টুকি -টাকি কাজ গুলো করার মাধ্যমে শরীরকে সর্বদাই কর্মচঞ্চল রাখতে হবে । কাপড় পরিষ্কার করা ও গুছানো এ ধরণের কাজ গুলো করুন। অফিসের কাজের মধ্যে থাকলে কাজের ফাঁকে ফাঁকে একটু হাটুন। যেমন কোনো কাগজ বা ফাইলের দরকার হলে সেটা নিজে গিয়ে নেয়ার চেষ্টা করুন। মোটকথা এক জায়গায় দীর্ঘ বা অনেক সময় বসে থাকবেন না। দীর্ঘ সময় বসে থাকার ফলে আপনার শরীরের অবস ভাব হতে থাকে এবং চলন শক্তি ও রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা হারাতে থাকে।
কায়িক পরিস্রম বা ব্যায়ামের প্রয়োজনীয়তা জানতে এখানে ক্লিক করুন
৫। মানসিক চিন্তা দূর করাঃ আমরা কারণে অকারনে নানা রকম দুশ্চিন্তা করে থাকি যেটা একেবারেই ঠিক না।মানুষে জীবনে যেমন সুখ চিরস্থায়ী নয় তেমন দুঃখও নয়। সুখ ও দুঃখ দুইটা মিলিয়ে আমাদের এই জীবন। তাই, দুঃখের সময় ভেঙ্গে পড়া যাবে না। মানসিক চিন্তা ভাবনা এমন ক্ষতিকর বিষয় যা আ্মাদের শারীরিক,মানসিক শক্তি ও মনোবল নষ্ট করে দেয়। ফলে আমাদের ভেতরে নানা রকম জটিল অসুখের সৃষ্টি করে। তাই মাথায় যখন কোনো চিন্তা বিরাজ করবে তখন অন্য কোনো কাজে মনোনিবেশ করতে হবে। এতে আমারা চিন্তা থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাবো। কোনো সময় দুশ্চিন্তাকে বেশি প্রধাণ্য দেওয়া উচিত না । এতে আমাদের ভবিষ্যৎ একেবারেই অন্ধকার।
৬। সঠিক পরিমাণে ঘুমানোঃ শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকতে হলে, অবশ্যই নিদিষ্ট পরিমানে ঘুমানো দরকার। একজন মানুষের প্রায় ৬ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। ভালো ঘুম না হলে প্রচুর সমস্যা সম্মুখীন হতে পারেন। যেমন সঠিকভাবে ঘুম না হলে শরীরে অলস ভাব চলে আসে।চোখের নিচে কালো দাগ পড়তে পারে।মেজাজ কড়া ,স্নায়ু বৈকল্য , কাজে মন না বসা ও এসবের সাইট ইফেক্ট হিসেবে চুল পড়া,এসিডিটি-আলসার ,হাইপারটেনসন ইত্যাদিও আরম্ভ হয়ে যেতে পারে। সঠিক ঘুম পারে আমাদের শরীরকে চাঙ্গা রাখতে। আর কিছু পরীক্ষার মাধ্যম জানা গেছে যে মানুষের ঘুম তাদের হাজারো রোগ প্রতিরোধ করে থাকে।
৭। শরীরের যত্ন নেয়াঃ শরীর ফিট থাকলে মন চাঙ্গা থাকবে আর কাজ করেও মজা পাওয়া যায়। তাই শরীরের যত্ন নেয়া আবশ্যক। যত্নের জন্য আমাদেরকে দৈনিক কয়েকবার হাত-পা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা যেমন কোনো কিছু ধরার পর হাত ধুয়া,বাইরে থেকে এসে পা ধুয়ে ঘরে উঠা , সকালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করা ও ঘুমাতে যাওয়ার আগে একবার দাঁত ব্রাশ ও গড়গড়া করা,ঠান্ডা পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার করা, নিয়মমাফিক চুল ও হাত পায়ের নখ কাঁটা নিশ্চিত করা।
৮। ভালো অভ্যাস রপ্ত করাঃ আমাদের স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর এমন সকল জিনিস বর্জন করা একান্ত জরুরী। যেমন আমরা জানি আগুনে হাত দিলে হাত পুড়ে যাবে। তারপরও যদি সেই কাজ করা হয় ,তাহলে তো অবশ্যই হাত পুড়ে যাবে।যেমন ধুমপান করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তারপরও ধুমপান করা হয়, তাহলে অবশ্যই আমাদের স্বাস্থ্যের উপর খুবই প্রভাব পড়বে। তাই ধুমপান সহ যাবতীয় নেশা দ্রব্য ও অসৎ কাজ ত্যাগ করা খুবই প্রয়োজন।পক্ষান্তরে যাবতীয় সৎকাজ নিজে করা ও করতে বলা,মেহমানদারী করা,গুরুজনদের সেবা করা, রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানো ও সকালে ঘুম থেকে ওঠা ইত্যাদি নিয়মিত অভ্যাসে পরিনত করা।
৯। সুস্থ বিনোদনে অংশ নেওয়াঃ এটা চরম সত্যি যে, যেসব কাজে নিজে বিনোদিত হই, সেটা অন্যকেও বিনোদন দিতে পারে। তাই, সবার আগেই নিজেকে বিনোদন দিতে হবে। নিজেকে বিনোদিত করার জন্য বিভিন্ন ধরণের খেলাধুলা করা, ভ্রমন করা, গান শুনা, মুভি দেখা, বেড়াতে যাওয়া,পিকনিক করা,ধর্মীয় ও অন্যান্য বই পড়া ,লেখা- লেখি করা ইত্যাদি । এতে আমাদের শরীর মন চাঙ্গা ও সতেজ থাকবে ,মেধাশক্তির বিকাশ ঘটবে এবং শারীরিক ও মানসিক উৎকর্ষ সাধিত হয়ে শারীরিক সুস্থতা বজায় থাকবে।
১০। নিয়মিত চেক-আপ করাঃ আমরা কেউই জানি না কখন কার দেহে কি রোগ বাসা বাধে।
এজন্য বয়স ৩০-৩৫ বছর পর্যন্ত ৬ মাস পর পর ব্লাড প্রেসার ও ব্লাড সুগার টেস্ট করতে হবে।
এ গুলো ঠিক থাকলে ৩৬-৪০ পর্যন্ত ৩ মাস পর পর ব্লাড প্রেসার , ব্লাড সুগার ও কোলেস্টেরল, ইসিজি
এ গুলোও ঠিক থাকলে ৪৬-৫০ পর্যন্ত ব্লাড প্রেসার , ব্লাড সুগার, কোলেস্টেরল,ইসিজি ও সিরাম ক্রিয়েটি নিন মান টেস্ট করাতে হবে।
এসব ঠিক থাকলে ৫১-৬০ পর্যন্ত ব্লাড প্রেসার , ব্লাড সুগার, কোলেস্টেরল,ইসিজি ও সিরাম ক্রিয়েটি নিন মান ও এঞ্জিওগ্রাম টেস্ট করাতে হবে।
বাকী জীবনে ১/২ মাস পরপর ঐসকল টেস্ট গুলোর সাথে প্রয়োজনে একাধিক বার এঞ্জিওগ্রাম করা যেতে পারে।
প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ খেতে হবেঃ
ঐসকল টেস্ট অস্বাভাবিক কিছু হলে সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ ও নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেহেতু রোগমুক্ত ও সুন্দর জীবন সবারই কাম্য। তাই আসুন উপরের সুস্থ থাকার সহজ উপায় গুলো যথাযত অনুসরণের মাধ্যমে সুস্থ ও সুন্দর জীবন,পরিবার ও সমাজ গঠনে সচেষ্ট হই।
প্রয়োজনীয় ডাক্তারের পরামর্শ নিতে নীচের লিঙ্কে ক্লিক করুন = https://www.valodactar.com/
কোন মন্তব্য নেই